কবিতা
ইহিতা এরিন
দ্বাদশ শ্রেণীর মাছরাঙারা
পুকুরের স্বরলিপি ঠোঁটে করে নিয়ে যাচ্ছে একা মাছরাঙা; রঙিন ডানায় লেপ্টে আছে নীলবোন অপরাজিতা।
কচুরিপানায় ঢেকে গেছে আমাদের দ্বাদশ শ্রেণির পুকুর। জলে আর রোদের প্রতিচ্ছবি দেখা যায় না। যদিও চেয়েছি শালুক ফোটা ভোর, ইচ্ছেগুলো ছিনিয়ে নিয়েছে শরতের ইতর বাতাস।
সাঁতারের বিদ্যাটি জন্মেরও আগে শিখেছি মাতৃগর্ভে। দুঃখের কচুরিপানা সরে গেলে আবারও সাঁতার কাটবো, মাছরাঙা বোনের শরীরে।
জোকার ও মুখোশ
এবং বেহালাবাদকের হাত ফসকে উড়ে গেছে মৃতমেঘের মমি
এইসব মেঘেদের চুমুকরোজ্জ্বল অলস পদ্ধতি শেখায় কাম ও কলা
সিঁড়িহীন দ্বিতল উপত্যকার ভাঁজে কর্পোরেট হাসি
ক্রীতদাসের হাসি যার আজও কোনো বাজারমূল্য নেই
হাসতে হাসতে যারা হাসতে ভুলে গেছে
তারা চাপা হাসি মাপা কান্নার মধ্যে লুকিয়ে ফেলে জোকারের পোশাক
পৃথিবী নামক বেহালাবাদক ছেলেটি
এখনো পোশাকের আড়ালে খোঁজে বিষাদের দিনরাত্রি
চোখের প্রতিফোঁটা শিশিরে ভেজে শুকনো ব্যবস্থাপনা
এখানে মুখোশ আর পৃথিবী অপেক্ষা করে একে অপরের শূন্যতায়
নিজের লাশের জন্য আরেকটি আয়না
কোথাও যাবো না ভেবে বসে থাকি; তারপর চলে যাই কবরখানার দিকে!
কোনো কোনো সমাধিফলকে নিজেরই নাম দেখে চমকে উঠি।
বিস্মিত নই, বরং আশ্বস্ত হয়েছি এই জেনে যে, জীবিত মানুষও নিজের সমাধিফলক দেখতে পায় কখনও কখনও। সমাধিতে ফুল দিতে যাই, বুনো ফুলেরা খামচে ধরে হাত। যেহেতু নিজেকে নিজেই চিঠি লিখেছিলাম, আমার সমাধিতে পুষ্পস্তবক নয়, শুধু কিছু পরাবাস্তব ঘুম দিও যদি পারো। পুষ্প কেবল নিজের জন্য ফোটে না; মূর্খের গলায় শোভাবর্ধক হিসাবেও ফোটে।
ফলে, বাধ্য লাশের মতো ঘাসের এমব্রয়ডারি সাজিয়ে দিলাম নিজের সমাধিতে।
