কবিতা
তানজিন তামান্না
সিস্টার
ঝিম ধরে যাচ্ছে সন্ধ্যার আলো-অন্ধকারে
হাসপাতালের করিডোর, মানুষের প্রচুর ভিড়
সামলে এসে বসি আপনার সামনে
স্মিত হাস্যে বিনিময় হয়— পরস্পরের ভালো থাকা!
আপনি খুব সযতনে আমার মাংসে বিঁধিয়ে দেবেন
সূঁচ। বলবেন, হাত শিথিল রাখুন, জোরে জোরে
নিঃশ্বাস নিন। আপনার প্রতিটি বাক্য অক্ষরে অক্ষরে মেনে
বসে আছি। এই মুহূর্তে আপনাকেই পৃথিবীর সবচেয়ে
আপন মনে হয়— মাতৃস্নেহের মতো আপনি তুলা দেন
আমার সূচবিদ্ধ জায়গায়। এই কোমল স্পর্শে আমার জলের
তৃষ্ণা মেটে। এলিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে— আপনার কোলে!
উঠে দাঁড়াই, ফিরে আসি… আবার দেখা হলে জানি,
আপনি আমাকে চিনতে পারবেন কারণ বহুবার
আমাদের ভাষা বিনিময় হয়েছে ভালোবাসায়!
ফাঁসির জন্য করুণা!
পৃথিবীর সব রঙ, সব আয়ু ক্ষয়ে আসে ক্রমে
ভীত সন্ত্রস্ত এইসব মৃত্যুদিনে
মনে হয় যেনো হৃদয়ের পাশেই—
ওৎ পেতে আছে বিষাক্ত থাবা!
এখনই ঝরবে লাল লাল পাপড়ি
ফুল-মেয়ের শরীর থেকে!
বসন্তের সূর্য থেকে যতো তেজ নেমে আসে
ততো পুড়ে খাক হয়ে যায় কি লোলুপ চোখ?
মৃত্যুর উপর দিয়ে জীবন হেঁটে চলে!
ফাঁসি থেকে তবু ছাড়িয়ে নিতে হয় তোমাদের;
তোমরা যারা ফুলকে পিষে ফেলো অকরুণ পায়ে!
