কবিতা
শৈবাল নূর
দুনিয়াবী
বসে থাকি সমুদ্র কিনারে, ফেরে ঢেউ সারাদিন।
আমার এ মন কাজ করছে অফিসে লাগাতার—
ঝিনুক কুড়াই, লিখি বালি-বুকে প্রেমিকার নাম
আর অফিসে ফাইল রেডি করে কল্পনা আমার।
দূরে সৌরজগতের গনিতে সূর্যটি ঘোরে ফেরে…
এখানে মহাবিশ্বের গায়ে, জৈবিক কাজের স্রোত
সূর্যের কল্পনা হয়ে পৃথিবীর ব্যাপ্তি প্রকাশিত—
আলোর আড়ালে কার নিটোল রয়েছে প্রাণবোধ!
চাঁদ ও তারকা রাশি জাগে উজ্জ্বল ব্রোঞ্জের মতো
রাত্রি জুড়ে রাঙায় আকাশ, দুরূহ আঁধার গান
জানি এ সহজ জ্ঞান, ভয়ে দিনে রয়েছে কি ম্রান?
দ্বৈত এ জীবন, বাঁচা আর মরার আগেই মৃত—
দেহ পঁচে মাটি, জলে, সুরে জাগে নতুন জীবন
হৃদয়, হৃদয় শুধু মরে গেলে জাগে না, জাগে না—
নিয়ত
ব্যাকুল মনে
আরশি ভাঙি
নিজের ছায়া
নিজস্বতা।
দৃশ্য থেকে
রক্ত দিয়ে
মুছেই চলি
মানবরূপ—
আলোর ফাঁকে
চমকে ওঠে
রাতের হাসি
সর্পফোঁস!
ফুল মাড়িয়ে
কবর বুকে
দাঁড়িয়ে আছি
নন্দঘোষ—
পশুর দেহে
জুড়িয়ে দেই
আপন মাথা
শিরশ্চেদে…
অশ্রু নাকি
বিজলি ঝরে!
জিহ্বা কাটি
নিজের দাঁতে।
আগাম ফেটে
বেরিয়ে আসো
মাতৃরূপে
ত্রিমূর্তি
দরুদ হয়ে
বৃষ্টি তিরে
শান্ত করো
বুকের বাম।
তুফান দাও
ধমনি ফেটে
প্রকাশ পাক
অঘোরী যোগী—
বোধের কোপে
ছিন্ন করি
ফেরাউনের
বিম্বগুলি…
কতল করি
কতল করি
আয়না ঘরে
বিম্বগুলি…
কথিত ঘুম
হয়তো অনীহার গায়ে
পূর্ণ জমে উঠছে না ঘুমের বুদবুদ
তোমার অন্যমনস্কতার ভেতর ছায়া ফেলছি
দৃশ্যত অটুট দেহ জাগিয়ে তুলতে
ঘুম আজও শাশ্বত ভাষায় প্রবাহমান—
ঠিক, আমার কণ্ঠ থেকে তোমার শ্রবণে
একাধারে প্রাচীন ঝরনাধ্বনির মতো
বুঝে ওঠার আগেই— করে নেশাগ্রস্ত!
ঘুমাও যামিনী, জাগার নৈপুণ্যতা নিয়ে—
২.
যার হৃদয়ে রাত, পার্থিব সকালে তার কী আসে যায়—
বিপরীতে, জনজীবনের গতিমুখ উচ্ছাস অধিক
ক্লান্ত করে , অনর্থক স্মৃতি-গরলের মতো
আর, সকল চিন্তা, পথ বেঁকে
এককে প্রবাহের মতো ইতরেরা নিগূঢ় নিদ্রা যায়
হিতোপদেশ
দিনে যে গাছ বেশি ছায়া দেয়
রাতে তো তার নিচেই ঘন হয় ব্যাকুল অন্ধকার!
