কবিতা
কান্নারহিত
ঢেউয়ের তোড়ে তাদের চেনা যাচ্ছে না।
তোমার স্বরের ভেতর ব্যাঙাচির আনাগোনা,
শোনো গুহাবাসী,
বিভূতির মাঠে কোনো মন্দিরে একা বসে দেখো-
জগৎ ভেসে যাচ্ছে নরম রোদের বানে।
এমন আলোর বন্যা –
দেখো কত ছায়া-দৃশ্য টেনে আনে
দেয়াল ধ্বসে পড়ছে কোথাও, তবু কেউ জাগছে না।
তোমার স্বরের ভেতর ব্যাঙাচির আনাগোনা,
ঢেউয়ের তোড়ে তাদের চেনা যাচ্ছে না।
বাইসাইকেল
তুমি কি চেয়েছিলে হতে একটা বাইসাইকেল,
নিম নিম আলোয়, সমুদ্রপাড়ে?
একলা বাঁশবনের পাহারাদার, অর্ধধূসর বোধ নিয়ে এক নীল প্যাঁচা?
ঐ শোনো ঝিঁঝিঁ ডাকা কোনো ঝোপের ভেতর একলা সঙ্গীত,
কেমন একলা হয়ে পড়ে ঝিঁঝিঁটাও,
ঝোপ, গান আর তোমাকে সাথে নিয়ে।
সবুজ মরিচবাতি
জলে নামলেই তোমাকে ধাওয়া করে
এক আলো মাছ
তুমি তাই বানিয়েছো এক হরিদ্রাভ খেয়া
এই খেয়া উভচর যান, জল ও আগুন ক্ষয়ে
উড়ে যায় ব্রহ্মাণ্ড ছুঁয়ে।
তিলক আঁকা এক জ্যোতিষি
যার সব গণনা একদিন ভুল প্রমাণিত করে
বৃষ্টি নামবে অঝরে এই মহাকাল ধুয়ে।
বাসক পাতায় –
আমি তার কিছু জল নিয়ে বানাবো
সেই আশ্চর্য পুকুর ;
দুপুর-রাত্রি
আর বুননের কাল কেটে গেলে
কাকচক্ষু জলে সকল ক্লান্তি ফেলে
থুয়ে,
ধুয়ে নেবো মম যকৃত,
অগ্ন্যাশয় আর বহু বেদনার ভারে ন্যুব্জ
এই অকিঞ্চিৎ হৃদয়।
আমার ফুসফুসে জ্বালাবো সবুজ মরিচবাতি,
নীল রঙ গ্রাস করা তামাটে পাথর।
আমি তাকে
রেখে যাবো ভাবিকালে –
আমার আর
আমার মত যারা যারা অনেক ভিড়ের ভেতর
নাই হয়ে থাকে
থাকা না থাকার দূরত্ব ঘুঁচিয়ে
মানুষ পরিচয়ে
সবুজ আলোয় নামাবে তারা ঝিঁঝি ডাকা ভোর।