কবিতা
চারু
যদি আমি আরও কিছুদিন বেঁচে থাকতে চাই এই বিষাক্ত ইলেকট্রিকের আলোয়
তাহলে আমাকে এ-ব্যাপারে নিঃসংশয় হতে হবে
যে রবি ঠাকুরের চারুলতা না নকশালবাড়ির চারু মজুমদার
কাকে আমি বেশি অনুভব করি
অনুভব করছি
এখন
আপনারা তো চারুকে চেনেন
চারুলতা
ওর দেখাটাকে চারু মজুমদারের দেখার সঙ্গে
কিভাবে আমরা গুলিয়ে ফেলছি
তা গুলিয়ে ফেললামই বা
গুলিয়ে ফেলা মানে কি ভুল করা
ভুল করা আর যাবো যাবো করে পায়রাবন্দে না গিযে আর্টিকেল লেখা
আর রেশমগুটির ভিতর বেড়ে ওঠা মারাত্মক মথ
আর্ট জাংগল
ভুল কে করেনি
চারুলতা
চারু মজুমদার
এরা তো ভুলের সমাহার
আর সেই ভুলগুলো এরা এমনভাবে চারিয়ে দিয়েছে আমাদের ভেতর
যে আমরা অস্বস্তিতে পড়ে গেছি
আর সন্দেহ করছি নিজেদেরকে
আর আগুন খুঁজছি
আগুন
নিজেদের ভেতর
হ্যা এ-ব্যাপারে তো আমরা দ্বিধাহীন যে এরা আগুন রেখে গেছে আমাদের ভেতর কোথাও
পাকা আম আমার পছন্দ
পাকা আম
সামান্য বাতাসেই গাছ থেকে টুপটাপ
নিচে পড়ে
তুমি জানো
কোন কোন আমগাছ অনেক উঁচু হয়
তার আম
মাটিতে পড়লে ফেটে যায়
তার আম
পাকলে
পাখিরা খেয়ে যায়
এখন
তোমার জানালা খুলে দাও
পাখি আসুক
ছেলেরা মাস্টারবেট করে কেন
‘মেয়েদের পিরিয়ড হয় ছেলেরা মাস্টারবেট করে’
আমি বললাম ওকে
ও
আমার বন্ধু
কিছুটা দ্বিধা নিয়ে হলেও আমাকে বিশ্বাস করলো
কেন না আমি অনেক কিছু জানি বিশেষত মার্কস-ফ্রয়েড আমার মুখস্ত
আমার বিষয়ে অন্তত ওর তাই ধারণা
যা হোক
ওর বয়স কম
শরীর বিষয়ে জ্ঞানগম্যি আরও কম অন্তত অন্য মেয়েদের তুলনায়
তবে কৌতুহল যথেষ্ট
‘ছেলেরা মাস্টারবেট করে কেন
ওদের কি মেয়ে নেই’
প্রশ্ন করে ও
‘আছে’
আমি বললাম
‘কিন্তু মেয়েদের বিছানায় নেওয়া আর মাস্টারবেট করা
দুটো আলাদা’
‘কীভাবে’
‘মাস্টারবেট করা মানে নিজের সঙ্গে কথা বলা
নিজের সঙ্গে কথা বলতে মানুষ জীবনে খুবই কম সময় পায়
আর মেয়েদের বিছানায় নেওয়া মানে ওদের খুশি করা
ওদের খুশি করা আর নিজেকে আনন্দের সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া
দুটোই ক্ষণস্থায়ী
আর অর্থহীন
আর শেষ অব্দি যা মারাত্মক হতাশাজনক’
বাখ
আমার কুকুরের প্রতি দয়া করে দয়া দেখাবেন না
ও কুকুর
ও ছারপোকা
ও তাজা একটা বই যার পৃষ্ঠাগুলো
রক্তে ভেজা
আর আমরা দ্বিধান্বিত
আর আমরা বিভ্রান্ত
কিন্তু আমাদের ভিতরেও তো রক্ত বয়ে চলেছে
কুকুরের রক্ত
ছারপোকার রক্ত
আটলান্টিকের হাঙরের চোয়ালে লেগে থাকা দাসের রক্ত
আপনি যদি চান
যদি সাহসী হোন
আপনার রক্তে
আমি আপনার প্রতিকৃতি এঁকে দিতে পারি
মাসির মেয়েরা
বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল
আর মাথায় এলো এপথে আমি নতুন
রাস্তায় পুরুষ মানুষ ছিল
পুলিশ ছিল কুকুর ছিল
অন্য কোন জন্তুজানোয়ার তো ছিল না
রাস্তার পাশে রং ঘষে দেওয়া পুরনো কালের বাড়িটার সামনে
আবছা আলোয় সারি সারি দাঁড়ানো
অনেকগুলো মেয়ে দেখলাম
স্বল্প পোশাক
প্রত্যেকের ঠোঁটের রং একই
একই চোখ
একই হাসি
ভেতরে কে যেন চেঁচিয়ে মাসিকে ডাকলো
মাসি
ওদের তো মা নেই