কবিতা
আঠেরোই আষাঢ় চোদ্দোশো ঊনত্রিশ
এই বরষা কাল। অন্তর্বাস ওড়া ঝরের ভেতর জল বয়ে যায়। কাদার মধ্যে একটা দাঁড়াস সাপের আসা-যাওয়ার চিহ্ন দেখে— কৈ ও চ্যাঙ মাছেরা ডাঙায় ফোঁস ফোঁস করলে— ভিজে চুপচুপে পান্না কাকি কানঠসা সুক্তার কাকাকে খুব জোরে জোরে ডাকে!
নয়ই অগ্রহায়ণ চোদ্দোশো ঊনত্রিশ
বৃষ্টি হয়, এদিকে সারাক্ষণ বৃষ্টি হয়! একটানা লাগামছাড়া ভিজতে থাকে দুটো ইঁদুর ও বাদুড়। বৃষ্টি মুখর— আকাশ পাতাল বৃষ্টি মুখর!মেঘে মাটিতে অদ্ভুৎ মাখামাখির পরে জলে-স্থলে এবঙ হাওয়ায় একটানা যৌথ গোঙানির টুপটুপ শব্দ ঝরে— ঝরে ঝরে ইঁদুরে-বাদুড়ে জমে যায় থকথকে কাদা!
সাতই বৈশাখ চোদ্দোশো তিরিশ
সুরু রাস্তা বেয়ে নেমে যায় গ্রাম্য বালিকা। ধানক্ষেত পেরিয়ে— একটা বড়ই গাছের নিচে দাঁড়িয়ে— সন্ধ্যা তারার মুখোমুখি কথা বলতে বলতে আমার দিকে তাকিয়ে খুব হাসে। আমি বুকের মলাট খুলে— এক হাতে হৃদয় আরেক হাতে তারাটি পেড়ে দিতে চাওয়া মাত্রই হাসতে হাসতে দুয়ার খোলা বাড়ির দিকে চলে যায় সে…
ষোলোই ভাদ্র চোদ্দোশো তিরিশ
আমাদের একান্ত আলাপে চালতার সুবাস,
শরীর জুড়ে জোনাকির আলোড়ন,
চোখ থেকে উড়ে যাওয়া বুদ্বুদ বাষ্পের বিন্দু
এবঙ এই মাঠের ভেতরে ঝিঝি ঘুমের আলিঙ্গনের দিকে
তাকিয়েছে যে খুনি জোক!
তার ওপরে ভেসে গেছে
আমাদের তীব্র নোনা ঘাম সমুদ্র…